ব্লগ তৈরির নিয়ম : ২০২৩


create your own blog. Image by Gerd Altmann from Pixabay 

হায় বন্ধু,

আগেই বলে রাখি এ আর্টিকেলটি শুধু মাত্র নতুনদের জন্য । অভিজ্ঞরা দূরে থাকুন । 

প্রযুক্তির কল্যাণে পৃথিবী আজ আমাদের হাতের মুঠোয় । মানুষ এখন অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই নিজেকে এখন বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে । এখন নিজেকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম হলো ব্লগ । আপনি যদি নিজেকে জ্ঞানের যে কোন শাখায় যোগ্য মনে করেন তাহলে আপনার অবশ্যই একটি ব্লগ থাকার প্রয়োজন । তো খুলে ফেলুন নিজের একটি ব্লগ.....     

১. ব্লগ কি ?

 ব্লগ হল এক ধরনের অনলাইন ব্যক্তিগত দিনলিপি বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক পত্রিকা। ব্লগ শব্দটি ওয়েবব্লগের সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলা হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। ব্লগ  মোটামুটি ম্যাগাজিনের সাথে তুলনা করা যায় । ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )

2222

২. Blogger নাকি wordpress.org ?

ব্লগিং ক্যারিয়ারে পা রাখার পূর্বে সবাই একটি সাধারণ প্রশ্নের সম্মুখিন হন যে, আমি WordPress দিয়ে ব্লগিং শুরু করব নাকি Google Blogger করব? তখন অনেকে পরামর্শ দেন WordPress দিয়ে শুরু করার জন্য আবার অনেকে Google Blogger দিয়ে ব্লগিং শুরু করার পরামর্শ দেন। যার ফলে দেখা যায় দু টানা পরামর্শের কারনে নবীন ব্লগাররা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছতে পারেন না। আমরা এ প্রশ্নগুলির সঠিক এবং পরিপূর্ণ সুস্পষ্ট সমাধান দেয়ার চেষ্টা করব। ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )

 Blogger এর সুবিধা : 

  • সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যায়। কোন প্রকার Hidden Charge নেই।
    • এটি ব্যবহার করা অত্যন্ত সহজ। ওয়ার্ডপ্রেসের মত নানাবিধ অপশনের বাহুল্যতা নেই। খুব সহজে ব্যবহার ও পরিচালনা করা যায়। বিশেষকরে খুব সহজে নতুন পোষ্ট করা যায়।
    • মাত্র কয়েক ক্লিক করে খুব সহজে একটি ব্লগ তৈরি করে নেয়া যায়।
    • আপনার যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সম্পর্কে ধারনা না থাকে, তাহলে এটি আপনার জন্য পারফেক্ট। কারণ এটিতে কোডিং না করেও ব্লগিং করা যায়।
    • ব্লগের কোড কাষ্টমাজ না করেও Variable ব্যবহার করে ব্লগের টেমপ্লেট ডিজাইন করা সম্ভব হয়।
    • ব্লগার গুগলের নিজস্ব প্রোডাক্সট হওয়াতে এর এসইও রেজাল্ট অসাধারণ। কারন গুগল এটিকে ডিফল্টভাবে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে রেখেছে। খুব কম সময়ে ও অল্প পরিশ্রমে সার্চ ইঞ্জিনে ভাল ফলাফল পাওয়া সম্ভব।
    • ব্লগারের সকল আর্টিকেল গুগলের নিজস্ব সার্ভার থেকে পরিচালিত হওয়ায়, এগুলো লোড হওয়ার গতি তুলনামূলকভাবে যথেষ্ঠ ভালো।

    • সামন্য কিছু টাকার বিনিময়ে আপনি অনেক ভালমানের প্রিমিয়াম টেমপ্লেট বিভিন্ন ওয়েব ডেভেলপারদের কাছ থেকে কিনে ব্যবহার করার সুযোগও রয়েছে।
    • স্মার্টফোনের জন্য রয়েছে ব্লগারের বিশেষায়িত অ্যাপ্লিকেশন, যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন থেকে পোস্ট করতে পারবেন।
    • যে কোন ধরনের সমস্যার ব্যাপারগুলি ইন্টারনেটে সার্চ করলেই খুব সহজে পাওয়া যায়।
    • ব্লগ হ্যাক বা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )

     Blogger এর অসুবিধা :

    • এটিতে wordpress.org এর মতো অনেক বেশি প্লগিং সুবিধা নেই ।
    • এটি খুব বেশি কাস্টমাইজ করা যায় না ।
    • বিশ্বের অধিকাংশ প্রফেশনাল ব্লগারদের প্রথম পছন্দ wordpress.org

    wordpress.org  এর সুবিধা:

    • ওয়েবসাইট এর প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে এর ডিজাইন। এটিকে নিজের মন মতো ডিজাইন করা যায় ।
    •  wordpress.org  এর বিভিন্ন প্লগিন ব্যবহার করে যেকোনো নতুন ফিচার যুক্ত করা সম্ভব wordpress.org  ওয়েবসাইটে। এছাড়াও wordpress.org  যেকোনো সমস্যার সমাধানেও প্লাগিন ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
    • এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে wordpress.org  যথেষ্ট কার্যকর ৷ wordpress.org  প্রথম থেকেই সার্চ ইঞ্জিন সমূহকে প্রাধান্য দিয়ে এসইও-বান্ধব সফটওয়্যার তৈরী করে আসছে। এর ফলে wordpress.org  ব্যবহার করে তৈরী ওয়েবসাইটে গুগল থেকেই অসংখ্য ভিজিটর পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও বিভিন্ন প্লাগিন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের এসইও কে উন্নত করা যায়। ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )

    wordpress.org  এর অসুবিধা: 

    • wordpress.org ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই html, css ও php সমন্ধে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে 
    • এটি অবশ্য়ই   Blogger এর মতো ফ্রী নয় ।
    • এটির মেনটেনেন্স খরচ খুব বেশি ।
    বিঃদ্রঃ মনে রাখতে হবে wordpress.org এবংwordpress.com দুটি কিন্তু এক নয় ।  wordpress.com সাইট  Google Blogger এর মতোই  ফ্রি ব্লগ খোলার একটি সাইট তবে এটির অভিজ্ঞতা আপনার জন্য সুখকর হবে না । Google Blogger এর মতো এটিতে এডসেন্স দেখিয়ে টাকা উপার্জন করার কোন সুযোগ নেই । এছাড়াও এটিতে আরো অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে তাই মনে করি  wordpress.com সমন্ধে কথা না বলাই ভালো ।
    সকল সুবিধা অসুবিধা বিচার করে বলা যায় যে আপনি যদি ব্লগিংয়ে নতুন হন তাহলে আপনার জন্য  Google Blogger ই বেস্ট । 

    আরো পড়তে পারেন

    ৩. Google Blogger দিয়ে ব্লগ তৈরি করার নিয়ম 


    প্রথমে Google দিয়ে একটি ইমেল তৈরি করে নিন । তার পর এখানে  গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে খুলে ফেলুন আপনার ব্লগ । Google Blogger দিয়ে তৈরি করা ব্লগে আপনি  একটি সাব ডোমেন পেয়ে যাবেন
    যেটি দেখতে এরকম হবে example.blogspot.com তবে মনে রাখবেন ব্লগ সফল, লাভজনক এবং প্রফেশনাল হতে হলে আপনাকে অবশ্যই  একটি Top Level Domain কিনতে হবে । মনে রাখবেন ডোমেন নেম যেন অবশ্য়ই সহজ, সুন্দর হয় । ডোমেন কেনার জন্য বিভিন্ন দেশী এবং বিদেশি ওয়েব সাইট রয়েছে । ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )

    ৪. Domain (ডোমেন) ক্রয়  :

    আপনার কাছে যদি ক্রেডিট কার্ড থাকে তাহলে আমি সাজেস্ট করবো বিদেশি সাইট থেকে ডোমেন নেম কিনুন । কেননা দেশি যেকোনো সাইট থেকে বিদেশি সাইটের সেবার মান অনেক ভালো এবং বিশ্বাসযোগ্য ।

    ডোমেন কেনার দুটি বিদেশি সাইট হলো :

    1. নেমসেপ
    2. গোডেডি
    আর যদি ক্রেডিট কার্ড না থাকে তাহলে দেশি বিভিন্ন সাইট থেকে বিকাশ/রকেট পেমেন্টের মাধ্যমে ডোমেন নেম ক্রয় করা যায় । 

    ডোমেন কেনার দুটি দেশি সাইট হলো: 

    1. ওয়েব হোস্ট বিডি
    2. পুতুল হোস্ট
    যে সাইট থেকে ডোমেন কিনবেন প্রথমে সেখানে গিয়ে  প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে । তারপর আপনি যে ডোমেনটি কিনতে চাচ্ছেন সেটি তাদের search box এ গিয়ে সার্চ করতে হবে ।  ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )
    ডোমেন নামটি পাওয়া সাপেক্ষে নির্ধারিত ফি (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১০০০) প্রদানের মাধ্যমে ১ বছরের জন্য ডোমেন টি ক্রয় করতে পারবেন । প্রতি বছর নির্ধারিত ফি এর মাধ্য়মে ডোমেন টি  renew করতে হবে । এবার আসুন  Blog এর মধ্যে Domain সেট আপ করার পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যাক ।

    আরো পড়তে পারেন

    ৫. Blog এর মধ্যে Domain সেট আপ করার পদ্ধতি

    আমি যখন ডোমেন ক্রয় করে সেটি আমার ব্লগে সেট আপ করতে গিয়েছিলাম  তখন পর্যাপ্ত তথ্য না জানার কারনে খুবই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম । আমার হোস্ট সাইটে ডোমেন সেট আপ করার ব্যাপারে সাহায্য চাইলে তারা আমার কাছ থেকে ৫০০ টাকা দাবি করে । 
    আশা করি  এ লেখাটি ভালো করে পড়ার পর আপনার আর সে সমস্যাটি হবে না । তো ডোমেন সেট আপ করার জন্য প্রথমে এখানে গিয়ে অথবা আপনার ব্লগের সেটিংস এ  চিত্রের মতো দেখানো কাস্টম ডোমেনে আপনার ডোমেনটি দিন ।  ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )


     তারপর নিচের মতো একটি  error মেসেজ আসবে ।


      


    এবার আপনার browser এ একটি new tab open করুন । যে হোস্ট সাইট থেকে আপনি আপনার ডোমেন ক্রয় করেছিলেন সেখানে লগিন করার পর  চিত্রের মতো দেখানো ডোমেন নামে ক্লিক করুন  ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )




    ডোমেন নামে ক্লিক করার পর নিচের মতো করে একটি চিত্র অসবে পাশে দেখানো ডোমেন নামের সেটিংসে  ক্লিক করুন ।


    নিচের চিত্রের মতো দেখানো একটি পেজ আসবে সেখান থেকে DNSManagement   সেটিংসে প্রবেশ করুন । 


    DNS Management  সেটিংসে প্রবেশ করার পর নিচের চিত্রে দেখানোর মতো সেখানে ৪টি সারির ৬টি কলাম পাবেন । 


    DNS Management

    ৬টি কলামের ৫টিতে  উপরের মতো করে তথ্য দিন । এখন কাস্টম ডোমেন নেম দেওয়ার সময় আসা error মেসেজটি  থেকে চিত্রের মতো করে দ্বিতীয় CNAME এর ১ম অংশ ১নং ঘরে ২নং অংশ ২নং ঘরে কপি পেস্ট করুন

    দ্বিতীয় সিনেমটিই আপনার ব্লগের পরিচিতি  এটি কারো কাছে শেয়ার করা যাবে না

    ব্যস হয়ে গেল আপনার ডোমেন সেটাপ । ডোমেনটি চালু হতে ১---১২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে । মনে রাখবেন এই দ্বিতীয় সিনেমটিই আপনার ব্লগের পরিচিতি  এটি কারো কাছে শেয়ার করা যাবে না ।  ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )
    পোস্টটি পড়ার পর আশা করি ডোমেন সেট আপ করতে আপনার আর কোন সমস্যা হবেনা।  তারপরেও সমস্যা হলে আমাদর সাথে যোগাযোগ করুন । ডোমেন সেট আপ করার পর এবার আপনার ব্লগের জন্য একটি ভালো থিমস প্রয়োজন ।
    আরো পড়তে পারেন

    ৬. থিমস কি ? এবং ব্লগে থিমস ইন্সটল করার পদ্ধতি

    থিমস হলো আপনার ব্লগের সৌন্দর্য আপনার ব্লগটি পাঠকের সামনে কিভাবে উপস্থাপিত হবে তা মূলত থিমসের উপর নির্ভর করে । অনলাইনে অসংখ্য থিমস ফ্রি এবং প্রিমিয়াম ( যা টাকা দিয়ে কিনতে হয় ) পাওয়া যায় । তবে আপনাদের দুটি প্রিমিয়াম থিমস দিচ্ছি একদম ফ্রি । আপনারা চাইলে ইন্টরনেটে এগুলো সমন্ধে জেনে নিতে পারে ।  ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )
    1. seo pro Premium
    2. super pro premium
    থিমস গুলো ডাউনলোড করে আনজিপ করুন । আপনার ব্লগে প্রবেশ করে 





    চিত্রে দেখানো ১নং থিম  সেটিংসে প্রবেশ করে  ২নং  কাস্টমাইজ সেটিংস এ গিয়ে ৩নং এ পুনরুদ্ধার করুন এ প্রবেশ করে আপনার কম্পিউটারে থাকা ডাউনলোড করা থিমসের লোকেশন দেখিয়ে দিয়ে আপলোড করে নিন । ব্যস হয়ে গেল আপনার একটি নিজস্ব  একটি ব্লগ । তারপরেও কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন । ( ব্লগ তৈরির নিয়ম )

    আরো পড়তে পারেন



    2 মন্তব্যসমূহ

    1. ব্লগ তৌরিতে ডোমেন কেনা কি আবশ্যক ?

      উত্তরমুছুন
      উত্তরগুলি
      1. হ্যাঁ ভাই, আপনি যদি ব্লগ নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চান তাহলে ডোমেন ক্রয়ের বিকল্প নেই । কারণ কাস্টম ডোমেন হলে আপনি সহজেই এডসেন্স পেয়ে যাবেন । আবার কাস্টম ডোমেন আপনার ব্লগকে প্রফেশনাল লুক দিবে । তবে ডোমেন ক্রয় না করেও আপনি ব্লগ তৈরি করতে এবং পরিচালনা করতে পারবেন । তবে ভবিষ্যতে আপনার ব্লগটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলে এর জন্য আপনাকে অনুতাপ করতে হবে । আশা করি বুঝতে পেরেছেন ।

        মুছুন
    নবীনতর পূর্বতন