SEO কি ? সহজ পদ্ধতিতে এসইও শিক্ষা ।

এসইও কি? এটি নতুন ব্লগারদের একটি কমন প্রশ্ন । আপনাকে বলে রাখি আজকের আর্টিকেলে আমরা SEO কি? কীভাবে একটি ব্লগের এসইও করতে হয় সে সমন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা করেছি । আশা রাখি আর্টিকেলটি মনোযোগসহকারে পড়ে এসইও কি? কীভাবে  একটি ব্লগের এসইও করে ব্লগে অর্গানিক ভিজিটর বৃদ্ধি করবেন সে সমন্ধে বিস্তারিত জানতে পারবেন। 

যখন একটি ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টের উপরের দিকে থাকবে তখন ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি পায়। ফলে ইনকামও বৃদ্ধি পায়। ধরুন, একজন ব্যক্তি গুগল সার্চে কিছু একটা লিখে সার্চ করল এবং ফলাফলে গুগল সার্চ লক্ষাধিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ফলাফল দেখালো। 

কিন্তু এক্ষেত্রে উক্ত ব্যক্তি প্রথমদিকে যে প্রতিষ্ঠানের নামগুলো পাবেন সে সকল প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই একটিকে বেছে নেবেন। ফলে আপনি সার্চ করলে যে প্রতিষ্ঠান সবার উপরে আসছে সেই প্রতিষ্ঠানই বেশি ভিজিটর পাবে এবং আয়ও বেশি করবে।

SEO কি

SEO কি ?

SEO এর ফুল মিনিং হলো (Search Engin Optimization) সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। যে কোনো ব্যক্তি কোনো তথ্য খোঁজ করলে যাতে সবচেয়ে সঠিক তথ্য খুঁজে পেতে পারে, সেজন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো কিছু প্রোগ্রাম তৈরি করে রেখেছে। যে প্রোগ্রামগুলোর কাজ হচ্ছে- সংশ্লিষ্ট সাইটগুলোর মধ্যে কিছু বিষয় পর্যালোচনা করে সঠিক সাইটগুলোকে সামনে নিয়ে আসা। সার্চ ইঞ্জিন প্রোগ্রামগুলো এই পর্যালোচনা অনেকগুলো বিষয়ের উপর ভিত্তি করে সম্পাদন করে থাকে।

যেমন ওয়েবসাইটের কনটেন্ট, ইউনিক ও প্রাসঙ্গিক তথ্য, সাইটের স্ট্রাকচার, ডিজাইন ইত্যাদি। সহজ কথায় SEO মানে সার্চ ইঞ্জিনগুলো যে মানদন্ডের উপর ভিত্তি সাইটগুলোর র‌্যাংকিং করে এবং ফলাফল প্রকাশ করে, সেই বিষয়গুলো মেনে সুনির্দিষ্টভাবে সাইট অপটিমাইজ করা। সফলভাবে একটি সাইট এসইও করলে নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডে সাইটটি উপরের দিকে আসবে। 

অর্থাৎ কোনো ওয়েব সাইটকে সার্চ রেজাল্টের উপরের দিকে নিয়ে আসার জন্য যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়, সেটিকে এসইও বলে। 

এসইও কত প্রকার?

SEO  দুই ভাবে বিভক্ত, অন পেজ এস ই ও এবং অফ পেজ এস ই ও। অন পেজ হলো, গুগল যে ধরনের আর্টিকেল পছন্দ করে তেমন করে লেখা আর অফ পেজ SEO  হলো, অন্য কোন ওয়েব সাইটের সাথে আপনার সাইটকে সংযুক্ত বা ব্যাকলিংক করা।

অন পেজ এসইও অপটিমাইজেশন কি ?

নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটের মধ্যে সীমিত থেকে যেসকল seo techniques ব্যবহার করা হয় সেগুলিকে বলা হয় "On page SEO techniques". অন পেজ এসইও -র কাজ হলো, বিভিন্ন মাধম্যে আপনার ব্লগ এবং ব্লগের কনটেন্ট গুলিকে সার্চ ইঞ্জিন (Google search) গুলির জন্য অপ্টিমাইজ করা। 

অন পেজ এসইও এর ফলে সার্চ ইঞ্জিন গুলি, আপনার ব্লগের বিষয়, কনটেন্ট এবং তথ্য গুলিকে ভালো করে বুঝতে পারে। ব্লগ পোস্টে অন পেজ এসইও টেকনিক গুলি যতটা ভালো ভাবে এপ্লাই (apply) করা হবে, search engine থেকে ততটাই বেশি পরিমানে visitors এবং traffic পাওয়ার সুযোগ থাকবে ।

প্রায় ৫ বছর আগে, অন পেজ এসইও বা খালি এসইও বললে কেবল “ব্লগের আর্টিকেলে কীওয়ার্ড এর প্রচুর ব্যবহার” করাটাই বোঝাতো। তখন ব্লগের আর্টিকেলে কীওয়ার্ড এর সীমাহীন ব্যবহার করেই গুগল সার্চ কে সহজে সিগন্যাল (signal) দেওয়া যেত এবং আর অন্য কিছু করার কোনো প্রয়োজন হতো না। 

কিন্তু, প্রযুক্তির (technology) উন্নয়ন যতটা বেশি হচ্ছে, ততটাই উন্নতি হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন বোট (search engine bots) গুলোর। ফলে,  এখন কেবল ব্লগের আর্টিকেলের জায়গায় জায়গায় সীমাহীন কীওয়ার্ড (keyword) ব্যবহার করেই এসইও ( SEO) করা যায় না । আর এরকম অযথা সীমাহীন  কীওয়ার্ড (keyword) ব্যবহার করাকে বলা হয়, “over keyword optimization” বা “keyword stuffing”. 

আপনি একই কীওয়ার্ড সীমাহীন সংখ্যায় ব্যবহার করলে, গুগল আপনার ব্লগকে কিছুদিন ট্রাফিক দিলেও পরের সময়ে (প্রায় ১ থেকে ২ মাস পর ) penalize অবশই করবে। যার ফলে, over keyword optimize করা আপনার আর্টিকেল গুলো গুগল সার্চে আর কোনো সময় দেখানো হবেনা।

এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল

এখনকার সময়ে অন পেজ এসইও বললে, ব্লগের আর্টিকেলের বিষয়ের সাথে জড়িত keyword গুলি সীমিত পরিমানে এবং জরুরি কিছু জায়গায় স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করতে হয় যাকে বলা হয় বলা হয় "এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল" ।

তাছাড়া, আরো অনেক বিষয় এবং টেকনিক রয়েছে যেগুলোকে “অন পেজ এসইও” র ক্ষেত্রে আপনার অনেক বেশি গুরুত্ব দিতেই হবে। অন পেজ এসইও -র কতিপয় বিষয়গুলো জানা থাকলে তবেই আপনি এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখায় সফলতা অর্জন করবেন । তবে চলুন এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়মগুলো জেনে নেওয়া যাক।

এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার নিয়ম

SEO কি

1. keyword research করা

মনে করুণ আপনি কোনো একটি বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখলেন কিন্তু সেই আর্টিকেলটির বিষযবস্তু মানুষ গুগল search করে না । তাহলে কিন্তু উক্ত আর্টিকেলে আপনাকে  সার্চ ইঞ্জিন হতে traffic বা visitors পাওয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে । মনে করুণ আপনি পরিমিতির সকল সূত্র নিয়ে একটি আর্টিকেল লিখলেন । 

কিন্তু পরিমিতির সকল সূত্র লিখে গুগলে search ভলিউম নেই । কিন্তু আপনি যখন keyword research করবেন তখন জানতে পারবেন পরিমিতির সকল সূত্র নিয়ে search না থাকলেও পরিমিতি সূত্রাবলী বা পরিমিতির সূত্র সমূহ নিয়ে  search ভলিউম রয়েছে । 

তখন আপনি আপনার পোস্টে পরিমিতির সকল সূত্র  ব্যবহার না করে পরিমিতি সূত্রাবলী বা পরিমিতির সূত্র সমূহ keyword ব্যবহার করতে পারবেন । এতে করে সার্চ ইঞ্জিন হতে  traffic বা visitors পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ।

প্রায় সকল keyword research টুলগুলো টাকার বিনিময়ে ব্যবহার করতে হয় । তবে Google keyword planner ফ্রিতে ব্যবহার করা যায় । এছাড়াও Ubersuggest, keywordtool ইত্যাদি keyword research করার জনপ্রিয় টুল । কিভাবে keyword research করতে হয় এ সমন্ধে ইউটিউবে অসংখ্য ভিডিও পেয়ে যাবেন ।

2. পোস্টে over keyword optimization না করা

keyword research করার পর কাঙ্খিত keyword পোস্টের সঠিক স্থানে বসাতে হবে । তবে কোনক্রমেই অযথা সীমাহীন keyword ব্যবহার করবেন না । তবে আপনার আর্টিকেলের বিষয়ের সাথে জড়িত আলাদা আলাদা keywords, শব্দ, বাক্য বা সার্চ টার্মস (search terms) আর্টিকেলে ব্যবহার করতে পারেন ।

ধরুন, আমি একটি আর্টিকেল লিখছি “What is SEO in Bangla” বিষয়টি নিয়ে। এখন, আমি যদি আর্টিকেলের বিভিন্ন জায়গায় কেবল “What is SEO in Bangla” কীওয়ার্ড বা বাক্যটি বার বার ব্যবহার করে “এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল” তৈরি করার চেষ্টা করি, তাহলে এখনকার সময়ে এটি হবে সবচে বড় ভুল। কেননা, এই ধরণের আর্টিকেল গুলোকে গুগল “low quality” এবং “over optimized content” বলে ভেবে নেয়।

ফলে, ভবিষ্যতে গুগল সার্চ থেকে আপনার ব্লগে কোনো রকমের ট্রাফিক বা ভিসিটর্স আসার কোনো রকমের সম্ভাবনা থাকছেনা। এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখার জন্য

“What is SEO in Bangla” কীওয়ার্ডটি বার বার ব্যবহার না করে, “focused keyword” এর সাথে রিলেটেড (related) কিছু শব্দ বা বাক্য আর্টিকেলে ব্যবহার করা যেতে পারে । যেমন, “এসইও কি”, “এসইও বাংলা টিউটোরিয়াল”, “অন পেজ এসইও কাকে বলে”, “এসইও কিভাবে করতে হয়”, “search engine optimization”, “এসইও টিপস”, “বাংলা এসইও কোর্স” এবং এভাবেই আরো অনেক আলাদা আলাদা কীওয়ার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে । 

তবে কোনটাই আপনার আর্টিকেলের শব্দের হাজরে ৫ বারের বেশি নয় । অর্থ্যাৎ আপনার পোস্ট যদি ১ হাজার শব্দের হয় তাহলে চেস্টা করবেন keyword ৫ বারের বেশি ব্যবহার না করার । এভাবে নিজের ব্লগে লিখা আর্টিকেলে, “focused keyword” এর সাথে জড়িত কিছু “related keywords” গুলি ব্যবহার করলে, ৩ টি অনেক বড় লাভ হয়েন 

>> এতে করে গুগল সার্চ ইঞ্জিন অনেক সহজে আপনার লেখা আর্টিকেলের বিষয়টি বা ট্রপিকটি বুঝতে পারেবে

>> যেহেতু, আর্টিকেলে SEO নিয়ে বিভিন্ন রিলেটেড কীওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়েছে, তাই গুগল সার্চে SEO নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আর্টিকেলটি রাংক (rank) করার সুযোগ বেড়ে যাবে।

>> “over keyword optimization” বা “keyword stuffing” হবে না । যার কারণে  গুগল আপনার ব্লগ কখনো penalize করবেনা।

3. পোস্টের সঠিক স্থানে keyword বসনো ।

আমি বলেছি যে, আর্টিকেলে টার্গেট করা কীওয়ার্ড (focused keyword) বার বার ব্যবহার করাটা অনেক খারাপ। তবে, আর্টিকেলের কিছু কিছু জায়গায় টার্গেট করা কীওয়ার্ড গুলি স্বাভাবিকভাবে (naturally) ব্যবহার করাটা কিন্তু অনেক লাভজনক ।সবার আগে focused keyword আর্টিকেলের টাইটেলে (title) ব্যবহার করতে হবে। 

তারপর, আর্টিকেলের Permalink url এ কীওয়ার্ডটি ব্যবহার করতে হবে। এবার, আর্টিকেলের প্রথম প্যারাগ্রাফে (paragraph) আপনার focused keyword বা বাক্যটি এক থেকে দুবার লিখতে হবে। এর পর, আর্টিকেলে ব্যবহার করা H2, H3 এবং H4 TAG গুলির মধ্যে এক থেকে দুবার লক্ষ্যবস্ত কীওয়ার্ড এর ব্যবহার করাটা জরুরি। 

এভাবে, আপনার আর্টিকেলের কিছু বিশেষ জায়গায় focused keywords গুলি ব্যবহার করে, গুগল সার্চ ইঞ্জিনকে অনেক সহজে নিজের কন্টেন্টের বিষয়টি বুঝিয়ে দিতে পারবেন। এর ফলে, আপনার কনটেন্ট গুলি অনেক ভালো ভাবে search engine এর জন্য optimize হয়ে যাবে।

4. Use alt tags for images

অন পেজ এসইও অপটিমাইজেশন এর ক্ষেত্রে, ছবিতে alt tag এর ব্যবহার করাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ব্লগে বা ব্লগের আর্টিকেলে আমরা যে ছবি (images) আপলোড করি সেগুলোর ব্যাপারে গুগল নিজে নিজে কিছু বুঝতে পারেনা। তাই, আমাদের আর্টিকেলে ব্যবহার করা ছবিগুলোর বিষয়ে গুগলকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আমরা “alt tag” ব্যবহার করতে পারি।

এতে সহজেই গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন গুলো বুঝতে পারে ছবিটি বিষয়বস্তু সমন্ধে । ফলে google image search থেকেও ট্রাফিক পাওয়ার সুযোগ বেড়ে যায়।মনে রাখবেন image alt tag/text গুলোর জায়গায় নিজের targeted focused keyword গুলো ব্যবহার করে, কনটেন্টটি অধিক ভালো করে SEO optimize করা যায় ।

এসইও কি

5. Simple & readable content

মনে রাখবেন, আপনার ব্লগে লিখা কনটেন্ট এবং আর্টিকেলের কোয়ালিটি কিন্তু সেরা মানের হতে হবে। আজ, ইন্টারনেটে যেকোনো বিষয়ে হাজার হাজার কনটেন্ট বা তথ্য রয়েছে। তাই, আপনার লেখা আর্টিকেল গুলি যদি পড়তে বা বুঝতে কঠিন হয়, তাহলে ব্লগে আশা ভিসিটর্স কেবল কিছু সেকেন্ডের মধ্যেই ফিরে যাবে। 

ফলে, high bounce rate এর কুপ্রভাব আপনার ব্লগের ওপরে পড়বে। যা SEO র ক্ষেত্রে কিন্তু অনেক খারাপ প্রভাব ফেলবে। তাই, নিজের ব্লগে লেখা কনটেন্ট গুলো সহজ এবং সরল ভাবে লিখবেন যাতে যে কেউ সহজে পড়ে বুঝতে পারেন। এছাড়াও বানান , বাক্য গঠন ইত্যাদির দিকে খেয়াল রাখবেন যাতে ভুলত্রুটি যতটা সম্ভব কম হয় । 

তাছাড়া, আর্টিকেলটি ছোট ছোট প্যারাগ্রাফ করে লেখবেন। এতে করে ব্লগ পাঠকদের লেখা গুলো পড়তে সুবিধে হবে। আপনার আর্টিকেল গুলিতে কাজের এবং বিষয়ের সাথে জড়িত সম্পূর্ণ তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন । কোনমতেই ভুল তথ্য দিবেন না । মনে রাখবেন ভুল তথ্য দিয়ে সাময়িক জনপ্রিয়তা পেলেও দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন । 

ভুল তথ্য শেয়ার করা, কোনো ব্যাক্তি বা সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ তথ্য দেওয়া শুধু আপনার জন্য নয় সমাজের জন্যও ক্ষতিকর । তাই দেশের নাগরিক হিসেবে দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করবেন।  

যতটা বেশি সময় আপনার ভিসিটর্স আপনার লেখা আর্টিকেল পড়বেন, ততটাই high bounce rate এর পরিমান কমে আসবে এবং গুগল সার্চ ইঞ্জিনে আপনার আর্টিকেলের রাংকিং (ranking) ভালো হতে থাকবে।

তাই, ব্লগে সব সময় এভাবে আর্টিকেল লিখবেন যাতে, ভিসিটর্স বা পাঠকরা আপনার কনটেন্ট পড়ে খুশি হন এবং আপনার লেখাগুলো পড়তে তাদের কোনো অসুবিধে না হয়।

আরো পড়তে পারেন

৬. Use internal linking technique

আপনি হয়তো আমার প্রত্যেক আর্টিকেলে কিছু লিংক (links) অবশই দেখেছেন। অবশ্য এই আর্টিকেলেও রয়েছে।এভাবে, নিজের ব্লগে আর্টিকেল লিখার সময়, আপনার আর্টিকেলের বিষয় বা কীওয়ার্ড এর সাথে জড়িত অন্যান্য আর্টিকেলের লিংক (link) দিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বলা হয় “internal linking of articles". এবং ব্লগের আর্টিকেলে এই ধরণের লিংক গুলিকে বলা হয় “ইন্টারনাল লিংক” (internal links). 

internal linking - এর ফলে আপনার ব্লগে আশা ভিজিটর্সরা যেকোনো বিশেষ বিষয়ে অনেক রকমের জ্ঞান নিতে পারবেন এবং আপনার ব্লগের “bounce rate” কমে যাবে। SEO র ক্ষেত্রে এভাবে আর্টিকেলের ইন্টারলিংকিং করাটা অনেক লাভজনক। 

internal linking - এর ফলে আপনার ব্লগের ভেতরে থাকা আর্টিকেল গুলোর মধ্যে SEO link juice pass হতে থাকে এবং internal backlinks তৈরি হয়।অন পেজ এসইও ক্ষেত্রে  এটি অনেক বেশি জরুরি, যদি আপনি গুগলে নিজের আর্টিকেল গুলি ভালো ভাবে রাংক করতে চান।

৭. Regularly post articles

নিজের ব্লগে আপনি মাসে কতটা করে আর্টিকেল পাবলিশ করছেন, সেটাও কিন্তু অন পেজ এসইও এর ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । Google সেই ব্লগ গুলিকে অনেক পছন্দ করে যেগুলিতে রেগুলার ভালো ভালো high quality articles পাবলিশ করা হয়।

তাই, চেষ্টা করবেন যাতে আপনি আপনার ব্লগে সপ্তাহে কম করে হলে ও ৩ টি করে ভালো ভালো আর্টিকেল পাবলিশ করার ।

তাছাড়া, যে ব্লগে রেগুলার (regular) আর্টিকেল পাবলিশ করা হয়না, ধরুন মাসে কেবল ২ থেকে ৩ টি আর্টিকেল, সেই ব্লগ গুলি গুগলের নজরে low quality র। এই ধরণের অনেক কম আপডেট করা ব্লগ গুলো গুগল তার SERP এ ভালো ভাবে রাংক করেনা। তাছাড়া নিয়মিত একই সময়ে ব্লগে পোস্ট করলে সে পোস্টগুলো Google এ দ্রুত ইনডেক্স হয় ।

8. Improve website loading speed

অন পেজ এসইও র অনেক জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে “page speed” কে ধরা হয়। । যে কোন ভিজিটরই স্লো লোডিং ওয়েবসাইটে যাওয়ার সাথে সাথে মোবাইলের back button টি টিপে, অন্য কোনো রেজাল্ট বা ওয়েবসাইট ভিজিট করে। গুগল এটা ভালো করেই জানে যে, একটি স্লো লোডিং ওয়েবসাইট কেউ পছন্দ করে না । 

কারণ, একটি ওয়েবসাইট যখন কেবল খুলতেই অনেক সময় নিয়ে নেয়, তখন সেই পরিস্থিতিটি প্রত্যেকের জন্যই অনেক বিরক্তিকর। এই কারণ একটি ওয়েবসাইটের পেজ লোডিং স্পিড (page speed) এখন গুগলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ranking factor হিসেবে ধরা হয়। তাই সবার আগে নিজের ব্লগ বা ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড চেক করুন। Google page speed insightstools.pingdom.comgtmetrix.com ওয়েব সাইটগুলোর মাধ্যমে ওয়েব সাইটের page speed চেক করতে পারেন ।

আপনার ব্লগের লোডিং স্পিড যদি ৩ সেকেন্ড এর থেকে বেশি বেরহয়ে থাকে, তাহলে আপনাকে নিজের ওয়েবসাইটের “পেজ লোডিং স্পিড” নিয়ে কাজ করতে হবে। মনে রাখবেন স্লো লোডিং ওয়েবসাইট হিসেবে, গুগল থেকে ট্রাফিক বা ভিসিটর্স পাওয়ার সুযোগ ৭৫% কমে যায় । 

তাছাড়া, যদিও আপনার কনটেন্ট বা আর্টিকেল, গুগল এর প্রথম সার্চ রেজাল্ট পেজে দেখানো হয়, তাও ওয়েবসাইট খুলতে অনেক সময় লাগার কারণে ৮০% ভিসিটর্স সাথে সাথে বিরক্ত হয়ে, আপনার ওয়েবসাইট ছেড়ে চলে যাবে।

কিভাবে ওয়েবসাইটের পেজ লোডিং স্পিড দ্রুত করবেন ? 

পেজ লোডিং স্পিড বৃদ্ধি করার জন্য কিছু speed optimization techniques ব্যবহার  করতে হবে। যেমন :

>> ব্লগের আর্টিকেলে ছবি (images) আপলোড করার আগেই, প্রত্যেকটি ছবি compre করে নিতে হবে ।এর জন্য আপনারা “compressjpeg.com” ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করতে পারেন ।

মনে রাখবেন, ব্লগ বা ওয়েবসাইটে আপলোড করা ছবি গুলির সাইজ ৫০kb থেকে বেশি হওয়া যাবে না । যতটা সম্ভব ছবির সাইজ কমিয়ে ব্লগে আপলোড করবেন।

>> একটি ভালো cloud web hosting company থেকে হোস্টিং ব্যবহার করুণ । আপনার ব্লগের হোস্টিং সার্ভার (hosting server) যতটা বেশি ভালো থাকবে, ততটাই দ্রুত ভাবে আপনার ব্লগের পেজ গুলি লোড হবে। একটি CDN (content delivery network) অবশই ব্যবহার করবেন। এই ক্ষেত্রে, cloudflare ব্যবহার করাটা অনেক সুভিধাজনক হবে।

>> একটি হালকা, পরিষ্কার এবং দ্রুত থিম (theme) ব্যবহার করবেন। যদি আপনি ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) ব্যবহার করছেন, তাহলে “wpastra“, “generatepress” বা “genesis framework” থিম গুলি ব্যবহার করতে পারেন। এগুলি ওয়ার্ডপ্রেসের সব থেকে দ্রুত এবং সেরা থিম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। 

যদি আপনি WordPress ব্যবহার করে ব্লগ তৈরী করেছেন, তাহলে অবশই একটি caching plugin ব্যবহার করবেন। তাছাড়া, WordPress ব্লগের ক্ষেত্রে একটি optimization plugin যেমন “WP Fastest Cache”, “WP Rocket”, “WP Super Cache”, “W3 Total Cache” বা “WP-Optimize” যেকোনো একটি অবশই ব্যবহার করুন। 

তবে ভালো কথা হলো আপনি যদি Google blogger ব্যবহার করে ব্লগ তৈরি করে থাকেন তাহলে website loading speed নিয়ে আপনাকে ভাবার প্রয়োজন নেই । কারণ Google blogger দিয়ে তৈরি ব্লগ এমনিতেই ফাস্ট হয় ।

৯. সঠিক ভাবে h1, h2, h3 ট্যাগ ব্যবহার কর ।

যে কোনো পোস্টে h1 ট্যাগ হয় একটি । আর সেটি হলো ব্লগ পোস্টের title. অতঃপর একটি  h1 ট্যাগের মধ্যে কয়েকটি h2 ট্যাগ এবং প্রতিটি  h2 ট্যাগের মধ্যে কয়েকটি h3 ট্যাগ ।

এসইও কি

১০. ব্লগপোস্টে ছবি, ভিডিও, PDF ইত্যাদির ব্যবহার

মনে রাখতে হবে ব্লগের প্রতিটি পোস্টে কমপক্ষে একটি ছবি তো ব্যবহার করতেই হবে । এছাড়াও পোস্ট সম্পর্কিত যত বেশি ছবি ব্যবহার করা যায় ততই ভালো । তবে মনে রাখতে হবে যে ব্যবহৃত ছবিগুলো যেন অবশ্যই কপি রাইট মুক্ত হয় । কপি রাইট ফ্রি ছবি ডাউনলোড করার জন্য pixabay , unsplashpexels প্রভৃতি ওয়েব সাইট ব্যবহার করতে পারেন ।

এছাড়াও SEO ক্ষেত্রে আরো পোস্টে আরো কিছু বিষয় খেয়াল করতে হবে । যেমন :

>> সম্পূর্ণ পোস্টে একই ফ্রন্ট ব্যবহার করা

>> পোস্টে বেশি রঙ্গিন না করা ইত্যাদি ।

অফ পেইজ অপটিমাইজেশন-Off Page SEO

Off Page SEO কে আমরা লিংক বিল্ডিং বলতে পারি। অর্থ্যাৎ সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে কোনো ওয়েব সাইটকে আনার জন্য ঐ ওয়েব সাইটের সাথে সম্পর্কিত অন্য ওয়েব সাইটের লিংক সংযুক্ত করাকে বলা হয় লিংক বিল্ডিং । আর লিংক বিল্ডিং করার পদ্ধতিই হল অফ পেইজ অপটিমাইজেশন । এক কথায় বলা যায় অফ পেইজ অপটিমাইজেশন হল কোন ওয়েব সাইটকে সেই সাইট সম্পর্কিত অন্য ওয়েব সাইটের সাথে লিংক সংযুক্ত করে প্রচার করা।

এসইও কি

অফ পেইজ অফটিমাইজেশন কেন প্রয়োজন?

যে কোন ওয়েব সাইটের জন্য অন পেজ এর পাশাপাশি অফ পেইজন SEO খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি কোন সাইটের মালিক হন তখন আপনার উদ্দেশ্য থাকে আপনার পণ্য অথবা সেবা এই সাইটের মাধ্যমে অন্যকে ওয়েব সাইটি থাকলে আপনার সাইটের ট্রাফিক বেশি হবে। এতে আপনার পণ্য অথবা সেবা এর প্রচার ও বেশি হবে। তাই এ কথা আমার বলতেই পারি আপনার সাইটের তৈরি করার যে উদ্দেশ্য সেটি পূরণ করার জন্য অফ পেইজ অপটিমাইজেশন খুবই প্রয়োজন।

অফ পেইজ অপটিমাইজেশন এর সুবিধা

অফ পেইজ অপটিমাইজেশন এর সুবিধা সমূহ অনেক। একটি ওয়েব সাইট যে উদ্দেশ্য তৈরি করা হয় বলা যায় সেই উদ্দেশ্য পূরণের রাস্তা হল অফ পেইজ অপটিমাইজেশন নিচে এর সুবিধা সমূহ লক্ষ করুন।

১। অফ পেইজ অপটিমাইজেশন করে যে কোন ওয়েব সাইটের পেইজ রাংক বাড়ানো যায়।

২। কোন সাইটের ট্রাফিক বাড়ানোর জন্য অফ পেইজ অপটিমাইজেশন অপরিহার্য।

৩। অফ পেইজ বলতে লিংক বিল্ডিং কে বোঝায় তাই একটি সাইটের সাথে অন্য সাইটের লিংক করতে অফ পেইজ অপটিমাইজেশন দরকার হয়।

৪. কোন সাইটের প্রচারের জন্য অফ পেইজ অপটিমাইজেশন অপরিহার্য ।

আশা করি আর্টিকেলটির মাধ্যমে এসইও কি ? এসইও কীভাবে করতে হয় এবং কীভাবে আপনার ব্লগে অর্গানিক ভিজিটর বৃদ্ধি করবেন ইত্যাদি প্রশ্নের উত্তরগুলো পেয়েছেন । আর কোনো প্রশ্ন জানার ইচ্ছা হলে আমাদেরকে জিঙ্গাসা করতে পারেন । আমরা চেষ্টা করবো যত দ্রুত সম্ভব আপনার প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে ।

আরো পড়তে পারেন

জুয়েল

আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। শিক্ষা সকলের অধিকার। আসুন আমরা প্রত্যেক শিশুর স্বপ্ন জয়ের সারথি হই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন