সিগনেচার বা স্বাক্ষর, শুদ্ধ না অশুদ্ধ সেটা বলার নির্দিষ্ট কোনো উপায় নেই। তবে ঠিক বা বেঠিক, এরকম একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতে পারে। সিগনেচার যিনি যে রকম করতে ভালোবাসেন, সেভাবেই করেন। মনে হয়, স্কুলের শেষের দিক বা কলেজ থেকেই নিজের সিগনেচারটি কেমন হবে, সেটা ঠিক করার একটা উদ্যোগ চলেই আসে। নানাভাবে, নিজের নামটিকে সিগনেচার হিসেবে দেখার ইচ্ছে জাগে, শুরু হয়, এই দেখার কাজটি,
স্বাক্ষর একজন মানুষের পরিচয় বহন করে |
স্বাক্ষর করার নিয়ম
স্বাক্ষর হিসেবে পুরো নাম পদবিসহ লিখতে পারেন |
নামের আদ্যক্ষরটি এবং পদবির আদ্যক্ষরটি ব্যবহার করতে পারেন |
নামের আদ্যক্ষর এবং পদবির পুরোটাই ব্যবহার করতে পারেন |
পুরো নাম এবং পদবীর আদ্যক্ষর |
শুধু নিজের নামটি স্বাক্ষর হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন |
স্বাক্ষর যখন সৃষ্টিধর্মী মানসিকতার প্রকাশ করে |
স্বাক্ষর যখন ফুলগাছে রূপ নেয় |
স্বাক্ষর যখন নৌকা |
কেউ যদি, একটি ফুল বা পাখীর ছবি দিয়ে বলেন, এটা তাঁর সিগনেচার, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু কেউ যদি কোনো অক্ষরকে পাখী বা ফুলের আদলে সাজান এবং বলেন যে এটা বর্ণমালার ওই অক্ষরটি, তাঁকে চ্যালেঞ্জ করা সহজ হবে না।
সিগনেচার বা স্বাক্ষর, মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির কল্পনাশক্তি, তাঁর আত্মবিশ্বাস, attitude, মানসিক গঠন, ইত্যাদির প্রতিফলন ঘটায়।
অনেকে খুবই সহজভাবেই নিজের পুরো নাম এবং পদবী লেখাকেই সিগনেচার বানিয়ে নেন। বলা হয় যে, তিনি খুব সহজভাবে চিন্তা করতে ভালোবাসেন। কোনো ব্যাপারেই তিনি গভীর বিশ্লেষণে যেতে আগ্রহ বোধ করেন না
আরো জানতে পারেন
স্বাক্ষর যখন মনস্তাত্বিক পরিচয় বহন করে |
অনেক সময় দেখা যায় যে সিগনেচারটি বাদিক থেকে শুরু হয়ে, ক্রমশ ডানদিকে উর্ধ্বগতি সম্পন্ন। বলা হয় যে, তিনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী। উপরের সিগনেচারটিতে, তেমন ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে।
আত্মপ্রত্যয়ের পরিচায়ক |
সকল কাজে তৃপ্ত ব্যাক্তিত্ব |
অনেকসময় দেখা যায় যে কেউ হয়তো, সিগনেচারের জন্য নির্ধারিত স্থানে, স্বাক্ষর করতে গিয়ে, সিগনেচারকে সেই নির্ধারিত স্থানের ভেতর সীমাবদ্ধ রাখতে পারেন না, সিগনেচার চলে যায় ওই স্থানের বাইরে। এক্ষেত্রে, বলা হয়, আত্মপ্রকাশে উত্সাহী মনোভাবের প্রতিফলন ঘটে।
সিগনেচার এর নীচে, অনেকেই তারিখ উল্লেখ করেন, হয়, দিন/মাস/বছর অথবা দিন/মাস শুধু।
যেখানে আলাদা করে তারিখ উল্লেখের সুবিধে নেই, সেখানে এ অভ্যাস খুবই উপযোগী হয়ে উঠে। কবে সিগনেচারটি করা হয়েছিলো, সে তথ্য ও প্রয়োজনীয় হয়ে উঠতে পারে।
সুতরাং, নানাভাবেই বিশ্লেষিত হতে পারে, সিগনেচার এর স্টাইল বা ধরণ।
পেশাগত ক্ষেত্রে, একটি ব্যাংকের চেকে জাল (forged) সিগনেচার সংক্রান্ত একটি তদন্ত করতে গিয়ে, Handwriting Expert এর সাথে signature নিয়েই, নানা কথা হচ্ছিলো। যাই হোক, মোটামোটি ভাবে, একটি সিগনেচার যেরকম হওয়া উচিৎ,
ক) সিগনেচার যেন নাম পদবীর একটু আভাস রেখে যায়।
খ) চট করেই যাতে কেউ সিগনেচারটিকে নকল করতে সক্ষম না হন।
গ) এক এক জায়গায় এক এক ধরণের স্বাক্ষর বা signature, নানা প্রশ্ন, বিতর্ক সৃষ্টি করতে পারে, সৃষ্টি হতে পারে আইন সংক্রান্ত কাজে জটিলতা। এরকম ক্ষেত্রে, বিভিন্ন স্টাইলের সিগনেচার যে একই ব্যক্তির সিগনেচার, সেটা প্রমাণ করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। অহেতুক ঝামেলা বলে, মনে হতে পারে।
ঘ) এমনভাবে নিজের সিগনেচারটি নির্বাচন করা দরকার, যাতে সেটাকে পরিবর্তন করার প্রয়োজন না হয়। প্রয়োজন হলে, পরিবর্তন করা যাবে, তবে, এক্ষেত্রে পরিবর্তনের কারণ হিসেবে, কিছু একটা বলার প্রয়োজন হবে।
সিগনেচার নকল বা forged করে, অনেকরকম জালিয়াতির ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। তবে, যতই নিখুঁতভাবেই সিগনেচার নকল করা হোক, সেটা একসময় ধরা পড়েই যায়। কারণ, সিগনেচার যিনি নকল করেছেন, তিনি কিনতু, আসল স্বাক্ষরকারী সিগনেচার করার সময়, যেভাবে লিখেছিলেন বা হাত ঘুরিয়েছিলেন, সেটা হুবহু নকল করতে সক্ষম হন না।
সিগনেচারটি করার সময় আসল স্বাক্ষরকারীর যে মনোভাব ছিলো, নকল স্বাক্ষরকারী সে মনোভাব অনুকরণ করতে সক্ষম হন না।
লেখার স্টাইলের মাঝে আমাদের মনোভাব প্রতিফলিত হয়। হাতের লেখা দেখেই একজন ব্যক্তি সম্পর্কে, কেউ কেউ বিশ্লেষণ করেন।
সেজন্য, খালি চোখে আসল আর জাল সিগনেচার দেখে, একই রকম মনে হলেও সুক্ষ তফাত থেকেই যায়।
ফলে, জাল সিগনেচার এর ক্ষেত্রে, আসল সিগনেচার এর সাথে, তুলনামুলক বিশ্লেষণে, জাল সিগনেচারটিতে কত ডিগ্রীতে সিগনেচার এর মাঝের U বা K অক্ষরটি শুরু এবং শেষ হয়েছে বা টার্ন নিয়েছে, সেটা ধরা পড়েই যায়। ধরে ফেলেন, ফরেনসিক, হস্তলিপি বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞ (Hand Writing Expert)রা।
একজন ব্যক্তি পাঁচবার একই রকম স্বাক্ষর করলে, স্বাক্ষরের তারতম্য হতে পারে, তথাপি এটা যে তাঁরই স্বাক্ষর, সেটাও নিশ্চিত করেন, Handwriting Expert রা।
সিগনেচার করার স্টাইল, লেখার স্পীড, সিগনেচার এর দৈর্ঘ্য বা length, প্রতিটি অক্ষরের পাশাপাশি নৈকট্য বা দূরত্ব, অক্ষরের উচ্চতা, ইত্যাদি নিশ্চিত করে বলে দেয়, চিনিয়ে দেয়, কোনটি, আসল আর কোনটি নকল। এক্ষেত্রে, আসল, নকল একাকার হওয়ার সম্ভাবনা, বলা যায়, একেবারেই নেই।
এজন্য অনেকেই বলেন,
" Your Signature represents you" ।
Your Signature represents you |
(signatures displayed here for illustration purpose only and do not represent genuine signature of anyone)
স্বীকার্য: আর্টিকেলটি আমার নয়। আর্টিকেলটি দারুন লেগেছে তাই Quora থেকে নিয়েছি। এটির সম্পূর্ণ ক্রেডিট Quora লেখক শুভেন্দু পুরকায়স্থ ভাইয়ের।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি আর্টিকেলটির মাধ্যমে স্বাক্ষর করার নিয়ম বিস্তারিত জেনে আপনার ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দেওয়ার অনুরোধ রইল । আর কোনো প্রশ্ন জানার ইচ্ছা হলে আমাদেরকে প্রশ্ন করতে পারেন । আমরা চেষ্টা করবো যত দ্রুত সম্ভব আপনার প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে।
আরো পড়তে পারেন