আধুনিক কালে প্রতিবেদন একটি বহুল ব্যবহৃত শব্দ। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, সংবাদপত্রে নানা বিষয় ও ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রতিবেন রচনা করা হচ্ছে। প্রতিবেদন ssc ও hsc শিক্ষার্থীদের বাংলা ২য় পত্রের সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত বিষয়। তাই সকল শিক্ষারর্থীর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানা তাদের জন্য অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগের আর্টিকেলে আমরা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এই আর্টিকেলে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন সাধারণত কোনো ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়। |
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন কাকে বলে?
কোনো প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, কার্যাবলি, ঘটনা বা অবস্থা যাচাই করে সে সম্পর্কিত তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত তুলে ধরে যে বিবরণী প্রণয়ন করা হয়, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন সাধারণত
কোনো ব্যক্তি বা কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে লেখা হয়। যেমন: কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
বার্ষিক বনভোজন বা বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা বা গ্রন্থাগার সম্পর্কে প্রতিবেদন,
কোনো পরীক্ষাকেন্দ্রে গোলযোগ সম্পর্কিত প্রতিবেদন, কোনো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের ওপর
ষান্মাসিক, বার্ষিক কিংবা দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয়তা
প্রশাসনিক কার্যক্রম, ব্যবসায়
আইন আদালত ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের বিশেষ গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
রয়েছে। আগে সাধারণত বিভিন্ন পত্রপত্রিকার প্রকাশিত বিবরণীকেই প্রতিবেদন বলে অভিহিত
করা হত। কিন্তু বর্তমানকালে সমাজ জীবনের বিচিত্র জটিলতার প্রেক্ষিতে নানা জাতের প্রতিবেদনের
গুরুত্ব বেড়েছে। এর উপযোগিতা মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
থেকে আলোচিত বিষয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য অবগত হওয়া যায় এবং তার প্রেক্ষিতে কোন
বিষয়ে নির্ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা লাভ করা সম্ভব। প্রতিবেদন কোন সংগঠনের কার্যক্রম
বাস্তবায়ন সহজ করে। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে কোন বিষয়ে পরিকল্পনা
গ্রহণ, সংগঠন, নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ, ফলাফল নিরূপণ, সমন্বয় সাধন ইত্যাদি কাজে সহায়তা
পাওয়া যায় । প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন একটি বলিষ্ঠ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবেও অবদান
রাখে।
কারণ এর মাধ্যমে কোন বিষয়
সম্পর্কে ভালভাবে জানা যায়। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন সংগঠন ব্যবস্থাপনায় সহায়তা
করে। প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু পরিচালনায়, নীতি নির্ধারণে প্রতিবেদন থেকে সাহায্য মিলে।
বিরোধপূর্ণ, জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিবেদনের সুপারিশ কাজে লাগে। প্রাতিষ্ঠানিক
প্রতিবেদন একটি স্থায়ী দলিল এবং পরবর্তীকালের কাজেও তা ব্যবহারযোগ্য।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের
উদ্দেশ্য হল নির্দিষ্ট কোন বিষয়বস্তু সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে সুস্পষ্টভাবে অবহিত করা।
এর বক্তব্য হবে নিরপেক্ষতার বৈশিষ্ট্য অনুসারী। এতে জটিল বিষয়ের ব্যাখ্যা থাকবে। প্রতিবেদনের
কোন বিষয় সম্পর্কে মতামত প্রকাশ করা হয়। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন কাজের
সমন্বয় সাধন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে থাকে ।
আরো পড়তে পারেন
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম
১. স্থান-কাল-পাত্র: প্রতিবেদন
শুরু হয় স্থান-কাল-পাত্রের বর্ণনা দিয়ে। মূলকথা বা সারাংশ লিখতে হয় ভূমিকা হিসেবে।
২. প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনে
সাধারণত ৩ টি অংশ থাকে। এগুলোর ধারাবাহিকতা রক্ষা করে লিখতে হয়। সূচনাংশে থাকে কর্তৃপক্ষের
নিকট পত্র। এরপর মূল প্রতিবেদন। সবশেষে থাকে প্রতিবেদন রচনা সংক্রান্ত তথ্য । প্রতিবেদন
রচনা সংক্রান্ত তথ্যে প্রতিবেদকের নাম, ঠিকানা ছাড়াও থাকে প্রতিবেদন রচনার সময়, তারিখ
ইত্যাদি ।
৩. প্রতিবেদন খামে ভরে
উপস্থাপন করাই বিধিসম্মত। তাই পরীক্ষার খাতায় প্রতিবেদনের শেষে খাম আঁকতে হয় ।
8. যে বিষয়ে প্রতিবেদন
লেখা হচ্ছে তার সামগ্রিক অবস্থার বর্ণনা থাকবে। মূল বিষয়ের বৈশিষ্ট্য ও বৈশিষ্ট্যসমূহের
ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বিস্তারিত উল্লেখ করতে হয়।
৫. মূল ঘটনা বর্ণনার সময়
কোন উৎস থেকে তথ্য পাওয়া গেছে তা উল্লেখ করতে হয়।
৬. প্রয়োজন অনুসারে বিশেষজ্ঞের
নাম-পরিচয়সহ তার মতামত বা মন্তব্য থাকবে।
৭. বিষয় পর্যালোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা সিদ্ধান্তমূলক মন্তব্য থাকে সবশেষে ।
নিচে প্রাতিষ্ঠিনিক প্রতিবেদন
লেখার কয়েকটি উদাহরণ উপস্থাপন করা হলো। ভালো করে লক্ষ্য কর একটি প্রাতিষ্ঠানিক
প্রতিবেদনে সূচনাংশে থাকে কর্তৃপক্ষের নিকট পত্র, এরপর একটি প্রতিবেদনের একটি
শিরোনাম, এরপর মূল প্রতিবেদন, এরপর প্রতিবেদকের নাম ঠিকানা
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার উদাহরণ
১. করোনায় বিশ্বপরিস্থিতি তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন রচনা করো ।
০৭.০১.২০২৩
বরাবর,
জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা
মানিকগঞ্জ, ঢাকা
বিষয়: করোনায় স্থবির
গতিময় বিশ্ব শীর্ষক প্রতিবেদন
সূত্র: জে.প্র.কা. ২০১.১.২০২৩/১০
(২)
জনাব,
"করোনায় স্থবির গতিময়
বিশ্ব' শীর্ষক প্রতিবেদন তৈরির জন্য আদিষ্ট হয়ে নিচের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করছি।
করোনায় স্থবির গতিময়
বিশ্ব
বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে
ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস জনিত রোগ কোভিড-১৯। এ পর্যন্ত প্রায় ষোলো লক্ষাধিক মানুষ
প্রাণ হারিয়েছে এ ভাইরাসের সংক্রমণে। আর আক্রান্ত প্রায় সাত কোটি। বিশ্বে করোনাভাইরাসে
আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায়
দুই কোটি। আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষের। যুক্তরাষ্ট্রের পর করোনায়
বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্রাজিল আক্রান্ত ও মৃত্যু বিবেচনায় লাতিন আমেরিকার দেশটিতে
এখন পর্যন্ত আক্রান্ত প্রায় ৭২ লাখ আর মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৮৬ হাজার মানুষের।
এরপর মৃত্যু বিবেচনায় ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এখানে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ১ লাখ
৪৫ হাজার মানুষের। এছাড়া রাশিয়ায় মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। ইউরোপের
আরেক দেশ ফ্রান্সে আক্রান্ত প্রায় ২৫ লাখ। মৃত্যুবরণ করেছে ৬০ হাজারের অধিক মানুষ।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও
আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ভারতে প্রায় ১ কোটি লোক আক্রান্ত। করোনার উৎপত্তিস্থল
চীনে প্রায় চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশেও করোনার সংক্রমণ ও
মৃতের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
করোনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিও
মুখ থুবড়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার
জন্য প্রণোদনা প্যাকেজসহ নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন
প্রতিবেদকের নাম: জুয়েল
রানা
প্রতিবেদনের শিরোনাম: করোনায়
স্থবির গতিময় বিশ্ব
প্রতিবেদনের তারিখ: ০৭
জানুয়ারি, ২০২৩
প্রতিবেদকের ঠিকানা: মানিকগঞ্জ, ঢাকা
খাম |
২. মনে করো, তুমি সোহানা। তোমার বিদ্যালয়ের ‘সুবর্ণজয়ন্তী’ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের একটি বিবরণ দিয়ে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটি প্রতিবেদন লেখো
উত্তর:
২৮,০৬, ২০২৩
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক
বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা।
বিষয়: বিদ্যালয়ে সুবর্ণজয়ন্তী
উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রতিবেদন
সূত্র : স. ক. মা. বা.
উ. বি. /৬ (৬)/২০২৩
জনাব,
সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক
বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃক সুবর্ণজয়ন্তী অর্থাৎ ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত
অনুষ্ঠান উদযাপন সম্পর্কে প্রতিবেদন রচনায় আদিষ্ট হয়ে নিচের প্রতিবেদনটি উপস্থাপন
করছি।
সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক
বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
গত ২৪শে জুন, ২০২২ সরকারি
করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় সুবর্ণজয়ন্তী অর্থাৎ ৫০ বছর
পূর্তি। এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ে একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই দিন বিদ্যালয়ে
অনেক পুরোনো ছাত্রীরা উপস্থিত ছিল। বিদ্যালয়ের ছাত্রী সংসদ বিষয়টি অত্যন্ত নৈপুণ্যের
সাথে পরিচালনা করে। তারা পুরো বিদ্যালয় বেলুন, ফুল, নতুন-পুরোনো ছাত্রীদের বিভিন্ন
ছবি দিয়ে সাজায়। সাজসজ্জায় রুচির স্পর্শ ছিল।
অনুষ্ঠানটি মূলত তিনটি
অংশে বিভক্ত ছিল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি
হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী। প্রধান শিক্ষকের ঘোষণার মাধ্যমে
আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রথম পর্বে আমন্ত্রিত অতিথিরা বক্তব্য দেন। তাঁরা
এই বিদ্যালয়ের নতুন-পুরোনো ছাত্রীদের অভিনন্দন জানান। এবং বিদ্যালয়ের গৌরব বৃদ্ধি
করার জন্য সব ছাত্রীকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে অভিবাদন জানান
দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয়
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল 'দলছুট' ব্যান্ড দলের অনবদ্য
সঙ্গীত উপস্থাপনা। পুরো আসর আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়ে। 'দলছুট' ব্যান্ডের পর মঞ্চে আসে
'গানকবির' দল যারা নতুন করে পুরোনো দিনের গানগুলো উপস্থাপন করেন। এ ছাড়াও বিদ্যালয়ের
বর্তমান ছাত্রীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। তৃতীয় পর্বে হয়, কৃতী শিক্ষার্থীদের
সংবর্ধনার সাথে পূর্বে আয়োজিত সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের
পুরস্কার বিতরণ করা হয় ও দরিদ্র ও অসহায় ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান
শেষে শুরু হয় আপ্যায়ন পর্ব। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিদ্যালয়ের
সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান ।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা
: সোহানা, খুলনা
প্রতিবেদনের শিরোনাম: সরকারি
করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
প্রতিবেদন তৈরি সময় :
বিকেল ৪.০০টা
প্রতিবেদন রচনার তারিখ: ২৮,০৬,
২০২৩
[এখানে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিবেদকের
ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে।]
৩. মনে কর, তুমি জিয়ান।
সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজে আয়োজিত বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কিত
একটি প্রতিবেদন রচনা কর।
উত্তর
১৪ই অক্টোবর, ২০২৩
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি
উচ্চ বিদ্যালয়।
চট্টগ্রাম
বিষয়: সৈয়দপুর সরকারি
কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয় আয়োজিত বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সম্পর্কিত প্রতিবেদন
।
সূত্র: সৈ/স/কা/উ/বি/৭/২০২৩
জনাব,
সম্প্রতি সমাপ্ত সৈয়দপুর
সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সংক্রান্ত একটি
প্রতিবেদন পেশ সম্পর্কে আদিষ্ট হয়ে নিম্নলিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছি।
সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি
উচ্চ বিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপন
১. সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি
উচ্চ বিদ্যালয় বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা বিগত ৭ই অক্টোবর থেকে ১৩ই
অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানসূচির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
২. সারাবছর নিয়মিত লেখাপড়ার
পর বার্ষিক পরীক্ষার শেষে প্রতিযোগিতার আয়োজন অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে। বৈচিত্র্যপূর্ণ
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা যেমন আনন্দ লাভ করেছে, তেমনই সারাবছরের অর্জিত
পুরস্কারসহ বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার একটি সুন্দর অনুষ্ঠানের
মাধ্যমে লাভ করায় ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত উৎসাহিত হয়েছে।
৩. প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু
ছিল বৈচিত্র্যময়। সব ধরনের শিক্ষার্থী যাতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সুপ্ত
মেধার বিকাশ ঘটাতে পারে সেজন্য বিষয়গুলো ছিল এ রকম: আবৃত্তি, উপস্থিত বক্তৃতা, নির্ধারিত
বক্তৃতা, বিতর্ক, গদ্যপাঠ, পুঁথিপাঠ, হাসির গল্প বলা, ধারাবাহিক গল্প বলা, সুন্দর হস্তাক্ষর,
প্রবন্ধ রচনা, স্বরচিত গল্প-কবিতা পাঠ, একক অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, রবীন্দ্রসংগীত,
নজরুলগীতি, আধুনিক গান, পল্লিগীতি, দেশাত্মবোধক গান ইত্যাদি। এতে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী
অংশগ্রহণে আগ্রহী থাকায় বাছাইয়ের মাধ্যমে সীমিতসংখ্যক প্রতিযোগীকে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায়
অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন। বিদ্যালয়ের
শিক্ষকগণ। প্রতিদিন চতুর্থ ঘণ্টা পর্যন্ত ক্লাস হওয়ার পর বিদ্যালয় মিলনায়তনে
হল উপরে পড়া দর্শকের সামনে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত রয়েছে।
৪. প্রতিযোগিতা প্রথম,
দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারীদের পুরষ্কৃত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে
বইে। শ্রেণি নিয়মিত উপস্থিতি, ভালো ফলাফল ইত্যাদি বিষয়েও পুরস্কার প্রদান করা হয়।
৫. বার্ষিক সাহিত্য সাংস্কৃতিক
প্রতিযোগিতা উপলক্ষে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মধ্যে বিপুল উৎসাহ ও উদীপনা ছিল। তা প্রতিযোগীদের
সংখ্যাধিক্য থেকে সহজেই অনুধাবন করা যায়। প্রতিযোগিতার সময় প্রতিযোগীরা অসাধারণ মেধা
মননের পরিচয় দিয়েছে। শিক্ষকগণ শৃঙ্খলা রক্ষায় সার্বক্ষণিকভাবে তৎপর ছিলেন। ছাত্র
ও শিক্ষকদের পারস্পরিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সফল হয়।
৬. প্রতিযোগিতার শুভ উদ্বোধন
করেছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং শেষ দিন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান
অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ট্রেজারার। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয়
অভিভাবকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিপুলসংখ্যক অভিভাবক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
৭. পুরস্কার বিতরণের পর
ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগীরা
অংশগ্রহণ করে। বিদ্যালয়ের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অত্যন্ত উৎসাহ-উীপনার
মধ্যে সমাপ্ত হয়েছে।
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা:
জিয়ান, চট্টগ্রাম
প্রতিবেদনের শিরোনাম: সৈয়দপুর
সরকারি কারিগরি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ উদযাপন
প্রতিবেদন তৈরির তারিখ
প্রতিবেদন তৈরির সময় : ১৪ই অক্টোবর, ২০২৩
[এখানে প্রতিষ্ঠান ও প্রতিবেদকের ঠিকানা সংবলিত খাম আঁকতে হবে।]
আমাদের শেষ কথা
আশা করি প্রাতিষ্ঠানিক
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম তোমার সফলতায় অবদান রাখবে। তোমার কোনো প্রশ্ন
বা মন্তব্য থাকলে আমাদেরকে কমেন্টে বা ফেসবুকের জানাতে পারো। পড়াশোনা সম্পর্কে বিভিন্ন
আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গেই থাক। ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার
সুযোগ করে দিও। ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। আল্লাহ হাফেজ...
আরো পড়তে পারেন
খুব সুন্দর করে বুজিয়েছ।
উত্তরমুছুনআমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ
মুছুন