ক্রিয়া কাকে বলে শ্রেণিবিভাগসহ বিস্তারিত

ক্রিয়া অর্থ কাজ করা (something doing)। ক্রিয়া এর ইংরেজি verb যে পদের মাধ্যমে কোনো কাজ করা বোঝায় তাকে ক্রিয়া বলে। বাংলা পদের অন্যতম একটি হলো ক্রিয়া পদ। পদ সমন্ধে ধারাবাহিক আলোচনার আজকের আলোচ্য বিষয় হলো ক্রিয়া কাকে বলে এবং ক্রিয়াপদ সমন্ধে প্রয়োজনীয় উদাহরণসহ বিস্তারিত। তো চলুন জানা যাক ক্রিয়া কাকে বলে?

ক্রিয়া কাকে বলে
 ক্রিয়া কাকে বলে

ক্রিয়া কাকে বলে

যে পদের দ্বারা কোনো কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বলে।

যেমন: ফুল ফুটেছিল। বৃষ্টি হবে।

ক্রিয়াপদের গঠন

ক্রিয়ামূল বা ধাতুর সঙ্গে পুরুষ অনুযায়ী কালসূচক ক্রিয়াবিভক্তি যোগ করে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। যেমন: "পড়ি" = পড়+ই। এখানে 'পড়্' ধাতু ও 'ই' ক্রিয়াবিভক্তি।

ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ

ভাব প্রকাশের দিক দিয়ে ক্রিয়াপদকে দু'ভাগে ভাগ করা হয়। যথা: 

ক. সমাপিকা ক্রিয়া

খ. অসমাপিকা ক্রিয়া

ক. সমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে

যে ক্রিয়া দিয়ে বাক্যের (বা মনোভাবের) পরিসমাপ্তি ঘটে, তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন: নাদিয়া বই পড়ছে। ছেলেরা খেলা করছে।

সমাপিকা ক্রিয়ার গঠন

সমাপিকা ক্রিয়া সকর্মক, অকর্মক ও দ্বিকর্মক হতে পারে। ধাতুর সঙ্গে বর্তমান, অতীত বা ভবিষ্যৎ কালের ক্রিয়া বিভক্তি যুক্ত হয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়।

খ. অসমাপিকা ক্রিয়া কাকে বলে

যে ক্রিয়া দিয়ে বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না, বক্তার কথা অসম্পূর্ণ থেকে যায়, তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন: আমি কলেজে গিয়ে। এখানে "গিয়ে" ক্রিয়াপদ দ্বারা মনের ভাব শেষ হয়নি। মনের ভাব সম্পূর্ণ হতে আরও শব্দের প্রয়োজন। তাই 'গিয়ে' একটি অসমাপিকা ক্রিয়া।

অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা

এক কর্তা: বাক্যস্থিত সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা এক বা অভিন্ন হতে পারে। যথা : তুমি চাকরি পেলে আর কি দেশে আসবে? 'পেলে' (অসমাপিকা ক্রিয়া) এবং 'আসবে' (সমাপিকা ক্রিয়া) উভয় ক্রিয়ার কর্তা এখানে তুমি।

অসমান কর্তা: বাক্যস্থিত সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা এক না হলে সেখানে কর্তাগুলোকে অসমান কর্তা বলে। 

ক. শর্তাধীন কর্তা: এ জাতীয় কর্তাদের ব্যবহার শর্তাধীন হতে পারে। যেমন: তোমরা বাড়ি এলে আমি রওনা হব। এখানে এলে' অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা 'তোমরা' এবং 'রওনা হব' সমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা 'আমি'। তোমাদের বাড়ি আসার ওপর আমার রওনা হওয়া নির্ভরশীল বলে এ জাতীয় বাক্যে কর্তৃপদের ব্যবহার শর্তাধীন।

খ. নিরপেক্ষ কর্তা: শর্তাধীন না হয়েও সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার ভিন্ন ভিন্ন কর্তৃপদ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রথম কর্তৃপদটিকে বলা হয় নিরপেক্ষ কর্তা। যেমন : সূর্য অস্তমিত হলে যাত্রীদল পথ চলা শুরু করল। এখানে 'যাত্রীদলের' পথ চলার সঙ্গে 'সূর্য' অন্তমিত হওয়ার কোনো শর্ত বা সম্পর্ক নেই বলে 'সূর্য' নিরপেক্ষ কর্তা। 

[বি. দ্র. প্রযোজ্য ক্রিয়ারূপে ব্যবহৃত হলে অকর্মক প্রযোজক ক্রিয়া সকর্মক হয়] 

আরো পড়তে পারেন

অসমাপিকা ক্রিয়ার গঠন 

ধাতুর সঙ্গে কাল নিরপেক্ষ -ইয়া (য়ে), -ইতে (তে) অথবা- ইলে (লে) বিভক্তি যুক্ত হয়ে অসমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়।

১. ইলে' > 'লে' বিভক্তিযুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার

ক. কার্য পরম্পরা বোঝাতে: চারটা বাজলে স্কুল ছুটি হবে

খ. প্রশ্ন বা বিস্ময় জ্ঞাপনে: একবার মরলে কি কেউ ফেরে?

গ. সম্ভাব্যতা অর্থে: এখন বৃষ্টি হলে ফসলের ক্ষতি হবে।

ঘ. সাপেক্ষতা বোঝাতে: তিনি গেলে কাজ হবে।

ঙ. দার্শনিক সত্য প্রকাশে: জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে? 

চ. বিধি নির্দেশে: এখানে প্রচারপত্র লাগালে ফৌজদারিতে সোপর্দ হবে।

ছ. সম্ভাবনায় বিকল্পে: আজ গেলেও যা, কাল গেলেও তা।

জ. পরিণতি বোঝাতে: বৃষ্টিতে ভিজলে সর্দি হবে।

২. ইয়া' > 'এ' বিভক্তি যুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার

ক. অনন্তরতা বা পর্যায় বোঝাতে: হাত-মুখ ধুয়ে পড়তে বস।

খ. হেতু অর্থে: ছেলেটি কুসঙ্গে মিশে নষ্ট হয়ে গেল।

গ. ক্রিয়া বিশেষণ অর্থে: চেঁচিয়ে কথা বলো না।

ঘ. ক্রিয়ার অবিচ্ছিন্নতা বোঝাতে: হৃদয়ের কথা কহিয়া কহিয়া গাহিয়া গাহিয়া গান।

ঙ. ভাববাচক বিশেষ্য গঠনে: সেখানে গিয়ে আর কাজ নেই।

চ. অব্যয় পদের অনুরূপ: ঢাকা গিয়ে বাড়ি খাব।

৩. 'ইতে> 'তে' বিভক্তি যুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার

ক. ইচ্ছা প্রকাশে: এখন আমি যেতে চাই।

খ. উদ্দেশ্য বা নিমিত্ত অর্থে: মেলা দেখতে ঢাকা যাব।

গ. সামর্থ্য বোঝাতে: খোকা এখন হাঁটতে পারে।

ঘ. বিধি বোঝাতে: বাল্যকালে বিদ্যাভ্যাস করতে হয়।

ঙ. দেখা বা জানা অর্থে: রমলা গাইতে জানে।

চ. আবশ্যকতা বোঝাতে: এখন ট্রেন ধরতে হবে।

ছ. সূচনা বোঝাতে: রানী এখন ইংরেজি পড়তে শিখেছে।

জ. বিশেষণ বাচকতায়: লোকটাকে দৌড়াতে দেখলাম।

ঝ. ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য গঠনে: তোমাকে তো এ গ্রামে থাকতে দেখি নি 

ঞ. অনুসর্গ রূপে: কোন দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে শ্যামল 

ট. বিশেষ্যের সঙ্গে অন্বয় সাধনে: দেখিতে বাসনা মাগো তোমার চরণ 

ঠ. বিশেষণের সঙ্গে অন্বয় সাধনে: পদ্মফুল দেখতে সুন্দর।

৪. ইতে' > 'তে' বিভক্তি যুক্ত ক্রিয়ার দ্বিত্ব প্রয়োগ

ক. নিরন্তরতা প্রকাশে: কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।

খ. সমকাল বোঝাতে: সেঁউতিতে পদ দেবী রাখিতে রাখিতে। সেঁউতি হইল সোনা দেখিতে দেখিতে।

টীকা: রীতিসিদ্ধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে সমাপিকা ক্রিয়া অনুপস্থিত থেকে অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহারে বাক্য গঠিত হতে পারে। যেমন: গরু মেরে জুতা দান। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ

ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ

কর্মপদের ভূমিকা অনুসারে ক্রিয়াপদকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: ১. সকর্মক ক্রিয়া ২. অকর্মক ক্রিয়া ৩. দ্বিকর্মক ক্রিয়া ৪. প্রযোজক ক্রিয়া। 

১. সকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে

 যে ক্রিয়ার কর্মপদ আছে তা-ই সকর্মক ক্রিয়া।

ক্রিয়াকে কী বা কাকে দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায়, তা-ই ক্রিয়ার কর্মপদ।  কর্মপদযুক্ত ক্রিয়াই সকর্মক ক্রিয়া। যেমন: বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন। এখানে ক্রিয়াকে 'কী দিয়েছেন' প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় কলম (কর্মপদ) এবং "কাকে দিয়েছেন" প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যায় আমাকে (কর্মপদ)। সুতরাং "দিয়েছেন' ক্রিয়াপদটির কর্মপদ থাকায় এটি সকর্মক ক্রিয়া।

অকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে

যে ক্রিয়ার কর্ম নেই বা কর্মপদ গ্রহণ করে না, তা অকর্মক ক্রিয়া। 

যেমন: মেয়েটি হাসে। সে রোজ এখানে আসে। সে ভালো দৌড়ায়। এখানে হাসে', 'আসে', 'দৌড়ায়'- অকর্মক ক্রিয়া, এদের কোনো কর্ম নেই। এসব ক্রিয়াকে অবলম্বন করে 'কী' বা 'কাকে' প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। আরো কিছু অকর্মক ক্রিয়া হলো ডোবা, থামা, নামা, মরা, নাচা, ওঠা, হাটা, বসা, জাগা, গুড়া, বেড়ানো, ঘুমানো, দৌড়ানো, চমকানো ইত্যাদি। 

দ্বিকর্মক ক্রিয়া কাকে বলে

যে ক্রিয়ার দুটো কর্মপদ থাকে এবং তার একটি মুখ্যকর্ম ও অপরটি গৌণকর্ম হলে তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে।

দ্বিকর্মক ক্রিয়ার বস্তুবাচক কর্ম পদটিকে মুখ্য বা প্রধান কর্ম এবং ব্যক্তিবাচক কর্ম পদটিকে গৌণ কর্মপদ বলে। বাবা আমাকে একটি কলম দিয়েছেন'- এ বাক্যে 'কলম' (বস্তু) মুখ্যকর্ম এবং 'আমাকে' (ব্যক্তি) গৌণ কর্ম।

প্রযোজক ক্রিয়া কাকে বলে

যে ক্রিয়া একজনের প্রযোজনা বা চালনায় অন্য কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। 

প্রযোজক ক্রিয়ার দুটো কর্তা থাকে। যথা : ক. প্রযোজক কর্তা খ. প্রযোজ্য কর্তা 

ক. প্রযোজক কর্তা: যে ক্রিয়া প্রযোজনা করে, তাকে প্রযোজক কর্তা বলে। যেমন: সাপুড়ে সাপ খেলায়। এখানে 'সাপুড়ে' প্রযোজক কর্তা এবং 'সাপ' প্রযোজ্য কর্তা। 

খ. প্রযোজ্য কর্তা: যাকে দিয়ে ক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হয়, তাকে প্রযোজ্য কর্তা বলে। যেমন : মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন। এখানে 'মা' প্রযোজক কর্তা ও শিশু' প্রযোজ্য কর্তা। 

সমধাতুজ কর্ম

বাক্যের ক্রিয়া ও কর্মপদ একই ধাতু থেকে গঠিত হলে ঐ কর্মপদকে সমধাতুজ কর্ম বা ধাত্বর্থক কর্মপদ বলে। যেমন: আর কত খেলা খেলবে। মূল 'খেল' ধাতু থেকে ক্রিয়াপদ 'খেলবে' এবং কর্মপদ 'খেলা' উভয়ই গঠিত হয়েছে তাই, 'খেলা' পদটি সমধাতুজ বা ধাতুর্থক কর্ম। সমধাতুজ কর্মপদ অকর্মক ক্রিয়াকে সকর্মক করে। যেমন: এমন সুখের মরণ কে মরতে পারে? বেশ এক ঘুম ঘুমিয়েছি। আর মায়াকান্না কেদোঁ না গো বাপু। তুমি মণিপুরী নাচ নাচবে। 

সকর্মক ক্রিয়ার অকর্মক রূপ

প্রয়োগ বৈশিষ্ট্যে সকর্মক ক্রিয়াও অকর্মক হতে পারে। যেমন:

অকর্মক: আমি চোখে দেখিনে। 

সকর্মক: আকাশে চাঁদ দেখিনে।

অকর্মক : আমি রাতে খাব না।

সকর্মক : আমি রাতে ভাত খাব না।

নামধাতু ও নামধাতুর ক্রিয়া

বিশেষ্য, বিশেষণ এবং ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের পরে "আ" প্রত্যয়যোগে যেসব ধাতু গঠিত হয়, সেগুলোকে নামধাতু বলা হয়।

নামধাতুর সঙ্গে পুরুষ বা কালসূচক ক্রিয়া-বিভক্তি যোগে নামধাতুর ক্রিয়াপদ গঠিত হয়। যেমন: ক. বেত (বিশেষ্য) + আ (প্রত্যয়) = বেতা (নামধাতু)।

যেমন : শিক্ষক ছাত্রটিকে বেতাচ্ছেন (নামধাতুর ক্রিয়াপদ)।

খ. বাঁক (বিশেষণ) + আ (প্রত্যয়) = বাঁকা (নামধাতু)।

যেমন: কঞ্চিটি বাঁকিয়ে ধর (নামধাতুর ক্রিয়াপদ)।

গ. ধ্বন্যাত্মক অব্যয়: কন কন- দাঁতটি ব্যথায় কনকনাচ্ছে। ফোঁস- অজগরটি ফোঁসাচ্ছে

ব্যতিক্রম: আ-প্রত্যয় যুক্ত না হয়েও কয়েকটি নামধাতু বাংলা ভাষায় মৌলিক ধাতুর মতো ব্যবহৃত হয়।

যেমন: ফল- বাগানে বেশ কিছু নিচু ফলেছে।

টক- তরকারি বাসি হলে টকে।

ছাপা- আমার বন্ধু বইটা ছেপেছে।

ক্রিয়াপদের শ্রেণিবিভাগ

গঠন বৈশিষ্ট্য অনুসারে ক্রিয়াপদকে দু ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: ১. একশাব্দিক ক্রিয়া ও ২. বহুশাব্দিক ক্রিয়া।

১. একশাব্দিক ক্রিয়া: এক শব্দের ধাতু দিয়ে গঠিত ত্রিয়াকে একশাব্দিক ক্রিয়া বলে। একশাব্দিক ক্রিয়া নানাভাবে গঠিত হতে পারে। 

ক. এক ধ্বনিদল ধাতুর সাহায্যে খা খা, নে. দে- ইত্যাদি। 

খ. বহু ধ্বনিদল ধাতুর সাহায্যে খাওয়া, দেখা- পড়া, শোনা- ইত্যাদি।

২. বহুশাব্দিক ক্রিয়া: একাধিক শব্দযোগে গঠিত ক্রিয়াকে বহুশাব্দিক ক্রিয়া বলে। বহুশাব্দিক ক্রিয়া দু ধরনের। যথা : ক. যৌগিক ক্রিয়া ও খ. যুক্ত বা মিশ্র ক্রিয়া। 

ক. যৌগিক ক্রিয়া: একটি সমাপিকা ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া একত্রে বসে যে ক্রিয়া গঠিত হয়, তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে। যেমন:

ক. তাগিদ দেওয়া অর্থে: ঘটনাটা শুনে রাখ।

খ. নিরন্তরতা অর্থে: তিনি বলতে লাগলেন।

গ. কার্যসমাপ্তি অর্থে: ছেলেমেয়েরা শুয়ে পড়ল।

ঘ. আকস্মিকতা অর্থে: সাইরেন বেজে উঠল।

ঙ. অভ্যস্ততা অর্থে: শিক্ষায় মন সংস্কারমুক্ত হয়ে থাকে।

চ. অনুমোদন অর্থে: এখন যেতে পার। 

বিভিন্ন ধাতুর সাহায্যে যৌগিক ক্রিয়ার গঠন ও বাক্যে প্রয়োগ

যা-ধাতু

ক. সমাপ্তি অর্থে: বৃষ্টি থেমে গেল।

গ. অবিরাম অর্থে: গায়ক গেয়ে যাচ্ছেন।

খ. ক্রমশ অর্থে: চা জুড়িয়ে যাচ্ছে। 

ঘ. সম্ভাবনা অর্থে: এখন যাওয়া যেতে পারে।

পড়-ধাতু

ক. সমাপ্তি অর্থে: এখন শুয়ে পড়।

খ. ব্যাপ্তি অর্থে: কথাটা ছড়িয়ে পড়েছে।

গ. আকস্মিকতা অর্থে: এখনই তুফান এসে পড়বে।

ঘ. ক্রমশ অর্থে: কেমন যেন মনমরা হয়ে পড়েছি।

দেখ-ধাতু 

ক. পরীক্ষা অর্থে: লবণটা চেখে দেখ।

খ. মনোযোগ আকর্ষণে: এ দিকে চেয়ে দেখ।

আস-ধাতু

ক. সম্ভাবনায়: আজ বিকেলে বৃষ্টি আসতে পারে।

খ. অভ্যস্ততায়: আমারা এ কাজই করে আসছি।

গ. আসন্ন সমাপ্তি অর্থে: ছুটি ফুরিয়ে আসছে।

ঘ. নিরাশ অর্থে: ওরা আজ আসতে পারবে না।

দি-ধাতু

ক. অনুমতি অর্থে: আমাকে যেতে দাও।

খ. পূর্ণতা অর্থে: কাজটা শেষ করে দিলাম।

গ. সাহায্য প্রার্থনায়: আমাকে অঙ্কটা বুঝিয়ে দাও।

নি-ধাতু

ক. নির্দেশ জ্ঞাপনে: এ বার কাপড় চোপড় গুছিয়ে নাও।

খ. পরীক্ষা অর্থে: কষ্টি পাথরে সোনাটা কষে নাও।

ফেল-ধাতু

ক. সম্পূর্ণতা অর্থে: সন্দেশগুলো খেয়ে ফেল।

খ. আকস্মিকতা অর্থ: ছেলেরা হেসে ফেলল।

গ. খাওয়া অর্থে: তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেল।

উঠ- ধাতু 

ক. ক্রমান্বয়তা বোঝাতে: ঋণের বোঝা ভারি হয়ে উঠছে।

খ. অভ্যাস অর্থে: শুধু শুধু তিনি রেগে ওঠেন।

গ. আকস্মিকতা অর্থে: সে হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল।

ঘ. সম্ভাবনা অর্থে: আমার আর থাকা হয়ে উঠল না।

ঙ. সামর্থ্য অর্থে: এসব কথা আমার সহ্য হয়ে ওঠে না।

লাগ-ধাতু

ক. অবিরাম অর্থে: মেয়েটি কাঁদতে লাগল ।

খ. সূচনা নির্দেশ: এখন কাজে লাগ তো দেখি।

থাক-ধাতু

ক. নিরন্তরতা অর্থে: এ বার ভাবতে থাক।

খ. সম্ভাবনায়: তিনি হয়তো বলে থাকবেন।

গ. সন্দেহ প্রকাশ : সে-ই কাজটা করে থাকবে।

ঘ. নির্দেশে: আর দরকার নেই, এ বার বসে থাক।

খ. যুক্ত বা মিশ্র ক্রিয়া বিশেষ্য, বিশেষণ, ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সঙ্গে মৌলিক ধাতু (যেমন : কনা, হ, দে, পা, ছাড়, ধর ইত্যাদি) যুক্ত হয়ে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয়, তাকে মিশ্র ক্রিয়া বলে। যেমন:

ক. বিশেষ্যের উত্তর (পরে) : আমরা তাজমহল দর্শন করলাম। এখন গোল্লায় যাও। 

খ. বিশেষণের উত্তর (পরে): তোমাকে দেখে বিশেষ প্রীত হলাম

গ. ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের উত্তর (পরে): মাথা ঝিম ঝিম করছে। ঝম ঝম করে বৃষ্টি পড়ছে।

আমাদের শেষ কথা

আশা করি ক্রিয়া কাকে বলে আর্টিকেলটি মাধ্যমে তোমার সফলতায়  অবদান রাখবে। তোমার কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমাদেরকে কমেন্টে বা ফেসবুকের জানাতে পারো। পড়াশোনা সম্পর্কে বিভিন্ন আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গেই থাক। ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিও। ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। আল্লাহ হাফেজ...

 আরো পড়তে পারো

জুয়েল

আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। শিক্ষা সকলের অধিকার। আসুন আমরা প্রত্যেক শিশুর স্বপ্ন জয়ের সারথি হই

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন