বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত শব্দ বা ধাতুকে পদ বলে। ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে, প্রাতিপদিকের পর বিভক্তি যুক্ত হইয়া তবে বাক্যে প্রযুক্ত "পদ" সৃষ্ট হয়। প্রচলিত বাংলা ব্যাকরণ অনুযায়ী পদ পাঁচ প্রকার। এর মধ্যে প্রথম পদ বিশেষ্য। বিশেষ্য অর্থ নাম। অর্থ্যাৎ নাম পদকেই বিশেষ্য পদ বলে। ইংরেজিতে বিশেষ্য পদকে বলা হয় Noun। ভর্তি পরীক্ষাসহ যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নের অন্যতম একটি বিষয় হলো পদ এবং এই সমন্ধে বিস্তারিত। পদ সমন্ধে ধারাবাহিক লেখার মধ্যে আজকের আলোচ্য বিষয় বিশেষ্য পদ কাকে বলে এবং প্রয়োজনীয় উদাহরণসহ বিশেষ্য পদের শ্রেণীবিভাগ।
বিশেষ্য পদ কাকে বলে
বিশেষ্য : কোনো ব্যক্তি বস্তু, স্থান বা প্রাণীর নামকে বিশেষ্য পদ বলে।অর্থ্যাৎ বাক্যমধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি, বস্তু, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম বা গুণের নাম বোঝানো হয় তাদের বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষ্য পদ কত প্রকার ও কী কী
বিশেষ্য পদ ছয় প্রকার। যথা : i. নাম বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য ii. জাতিবাচক বিশেষ্য iii. দ্রব্য বা বস্তুবাচক বিশেষ্য iv. সমষ্টিবাচক v. ভাববাচক বিশেষ্য ও vi. গুণবাচক বিশেষ্য ।
চিত্রে বিশেষ্য পদের শ্রেণিবিভাগ দেখানো হয়েছে |
i. নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য কাকে বলে
i.
নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য : যে পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, ভৌগোলিক স্থান বা সংজ্ঞা
এবং গ্রন্থ বিশেষের নাম বোঝায়, তাকে নামবাচক বিশেষ্য বলে । যেমন :
ক.
ব্যক্তির নাম : নজরুল, ওমর, আনিস, মাইকেল ।
খ.
ভৌগোলিক স্থান : ঢাকা, দিল্লি, লন্ডন, মক্কা।
গ.
ভৌগোলিক সংজ্ঞা : (নদী, পর্বত, সমুদ্র) মেঘনা, হিমালয়, আরব সাগর।
ঘ.গ্রন্থের
নাম : গীতাঞ্জলি, অগ্নিবীণা, দেশে বিদেশে, বিশ্বনবি।
ii. জাতিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে
ii.
জাতিবাচক বিশেষ্য : যে পদ দ্বারা কোনো একজাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায়,
তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : মানুষ, গরু, পাখি, গাছ, পর্বত, নদী, ইংরেজ ইত্যাদি।
iii. বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য কাকে বলে
iii.
বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য : যে পদে কোনো উপাদানবাচক পদার্থের নাম বোঝায়, তাকে
বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। এ জাতীয় বস্তুর সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ণয় করা
যায়। যেমন : বই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, মাটি, চাল, চিনি, লবণ, পানি ইত্যাদি।
iv. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে
iv.
সমষ্টিবাচক বিশেষ্য : যে পদে কোনো দল বা গোষ্ঠীর একক বা সমষ্টি বোঝায়, তা-ই সমষ্টিবাচক
বিশেষ্য । যেমন : সভা, জনতা, সমিতি, পঞ্চায়েত, মাহফিল, ঝাঁক, বহর, দল
v. ভাববাচক বিশেষ্য কাকে বলে
v.
ভাববাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য পদে কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, তাকে
ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন : গমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ), দর্শন (দেখার কাজ), ভোজন (খাওয়ার
কাজ), শয়ন (শোয়ার কাজ), দেখা, শোনা, ধরন, করণ, চলন, বলন ইত্যাদি।
vi. গুণবাচক বিশেষ্য কাকে বলে
vi.
গুণবাচক বিশেষ্য : যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায়, তা-ই গুণবাচক
বিশেষ্য। যেমন : মধুর মিষ্টত্বের গুণ- মধুরতা, তরল দ্রব্যের গুণ- তারল্য, তিক্ত দ্রব্যের
দোষ বা গুণ- তিক্ততা, তরুণের গুণ- তারুণ্য ইত্যাদি। তদ্রূপ : সৌরভ, স্বাস্থ্য, যৌবন,
সুখ, দুঃখ ইত্যাদি।
আমাদের শেষ কথা
আশা করি বিশেষ্য পদ কাকে বলে উদাহরণসহ বিশেষ্য পদের শ্রেণীবিভাগের আলোচনাটি তোমার সফলতায় অবদান রাখবে। তোমার কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমাদেরকে কমেন্টে বা ফেসবুকের জানাতে পারো। পড়াশোনা সম্পর্কে বিভিন্ন আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গেই থাক। ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদেরকেও জানার সুযোগ করে দিও। ভুল-ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল। আল্লাহ হাফেজ...
আরো
পড়তে পারেন